পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায়

Lockdown এর পর স্কুল কলেজ আবার খুলতে শুরু করেছে। কিন্তু আপনার তো পড়তেই ইচ্ছে করেনা, পড়তে বসলে বোরিং লাগে, বিরক্ত লাগে।

আর সেই জন্যই আপনি হয়তো জানতে চাচ্ছেন কীভাবে খুব সহজেই পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া যায়, তার কৌশল ও টিপস গুলো।

বর্তমানে পড়ালেখা থেকে বিচ্ছিন্ন কিংবা মনঃসংযোগ হওয়ার অনেক উপায় রয়েছে, যেমনঃ Facebook, instagram এমন কি youtube. আপনি এইগুলো যদি ঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে এইগুলোই আপনার জীবনে অন্ধকার নিয়ে আসতে পারে।

আমাদের মধ্যে অনেকেই ঘন্টার পর ঘন্টা facebook স্ক্রল করতে থাকে। তারপর বোরিং লাগলে instagram এ গিয়ে মজার  মজার reels দেখে, তারপর হয়তো youtube গ গিয়ে ২.৫ ঘন্টার একটি আস্ত সিনেমা ও দেখে ফেলে।

এভাবেই দিনের বেশি সময় নষ্ট করার পড যখন পড়তে বসার টাইম আসে তখন মন বসেনা পড়ার টেবিলে। মনটা ছটপট করতে থাকে, একবার এই কোথা ও কোথা মনে পড়ে। আর এভাবেই কেটে যায় সময়।

তাই আজ আমরা আলোচনা করব কীভাবে পড়ালেখায় মন বসানো যায়।

পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়

১) পড়ার জায়গা নির্ধারন।

আমাদের মধ্যে অধিকাংশ ছেলে মেয়েরা খাটের উপর বসেই পড়ে। এমন স্টাইল এ বসে যে বোঝাই যায় না, সে বই পড়ছে নাকি সিনেমা দেখছে। খাটের উপর শুয়ে বা হেলান দিয়ে বা কাত হয়ে পড়ছে। আর এভাবে কিছুক্ষণ পড়ার পর মনে হয় এবার একটু বিশ্রাম নেওয়া দরকার। আর এই বিশ্রামেই কেটে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা।

তাই অবশ্যই চেয়ার টেবিলে পড়তে হবে। আমি জানি চেয়ার টেবিলে বসে পড়ালেখা করাটা আপনার অতোটা আরামদায়ক হবে না। প্রথমদিকে হয়ত আপনার মন ও চাইবে না। comfortable feel হবে না।

কিন্তু মনে রাখবেন পড়ালেখা একটি সাধনার বিষয়, সেখানে সবসময় আরাম হবে না। আর ভালো ফলাফল এর জন্য তো একটু কষ্ট তো করতেই হবে। তাই চেয়ারে বসার সময় হেলে দুলে কাত হয়ে বসলে চলবে না। সোজা হয়ে, টেবিলে বই রেখে পড়তে হবে। এবং এমন একটি জায়গার বসতে হবে যেখানে খুব কম শব্দ আসে।

২) Make it easy.

চিন্তা করুন এটা খুব সহজ। আপনি কী জানেন কেন আপনার পড়ায় মন বসতে চায় না। কারন পড়ার সময় আপনার মেন্টাল পেইন হয়। আর আপনি মেন্টাল পেইন থেকে বাচার জন্য আপনি পড়া থেকে দূরে থাকেন। আর এই কারনেই পড়ালেখা চপনার কাছে হার্ড লাগে, কঠিন মনে হয়। আর এর জন্য আপনাকে যা করতে হবে।

যখন আপনি পড়তে বসবেন তখন আপনি মনে মনে বলবেন আরে এটা তো একটি সহজ বিষয়। যেমন এই চেপ্টার টা এতো সহজ আমি এটা ৪০ থেকে ৫০ মিনিটে শেষ করে ফেলব, তা সেটা যত কঠিনই হোক না কেন।

একটা কথা মনে রাখবেন কোন চেপ্টার বা কোন কাজ বা কোন বিষয় সহজ বা কঠিন বলে কিছু হয় না। এটা আপনার উপর নির্ভর করে, আপনি এটাকে কোন দৃষ্টিভঙ্গিতে এটাকে দেখছেন।

যদি আপনি মনে করেন কাজটা সহজ, তাহলে ধীরে ধীরে কাজটা সহজ হতে থাকবে আর যদি আপনি মনে করেন কাজটা কঠিন তাহলে সত্যিই ধীরে ধীরে কঠিন হতে থাকবে।

তাহলে বোঝাই যাচ্ছে কাজটা কঠিন মনে করলে কঠিন, সহজ মনে করলে সহজ। তাই যদি মনেই করতে হয় তাহলে সহজ ভাববো। এভাবেই ধীরে ধীরে পড়ালেখাটা আমাদের কাছে আরো সহজ মনে হতে থাকবে।

৩) লিখতে হবে বা বলতে হবে।

যখন আমরা creative ভাবে না পড়ি তখন আমরা অল্প সময়ের মাঝে বোর হয়ে যাই। তাই পড়ার ফাকে ফাকে পয়েন্ট গুলো না দেখে লিখতে হবে।

আবার যদি সব পয়েন্ট আপনার মনে পড়ে তাহলে দেখবেন আপনার মধ্যে এক আলাদা রকমের confident কাজ করবে।

এছাড়াও কিছু পড়ার পর নিযেই নিজেকে বোঝাতে হবে। তাহলে ওই বিষয়টিতে কোথাও সমস্যা থাকলে বুঝতে পারবেন। এটাও আপনার পড়ার প্রতি interest grow করবে।

৪) নিযেকে Reward দিতে হবে।

এটা হলো পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার বেস্ট ট্রিক। যদি আপনাকে instant পড়ায় কিংবা যেকোন কাজে মনোযোগ বসাতে হয় তাহলে এটা সবচেয়ে ভালো ট্রিক।

এই ট্রিক এর দুটি ধাপ

প্রথমত কাজটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। যেমন ধরুন আজ সন্ধাবেলায় আপনাকে ৯৯ টা সর্ট প্রশ্ন পড়তে হবে তাহলে আপনি সেগুলোকে ৩৩, ৩৩, ৩৩ এইরকম তিনভাগে ভাগ করে ফেলুন। এবার আপনি পড়া শুরু করুন।

যখনি আপনি ৩৩ টা প্রশ্ন পড়ে ফেলবেন তখন নিযেই নিজেকে reward বা পুরুষ্কার দিন। এই reward য কোন কিছু হতে পারে, পাঁচ মিনিট নিজেকে বিশ্রাম দিতে পারেন। চকলেট খেতে পারেন, বা যদি আপনি আপনার প্রিয়জনের সাথে গল্প করতে পারেন। অথবা এমন কিছু করতে পারেন যার মাধ্যেমে আপনার মন খুশি হয়ে যায়।

তারপর আপনাকে আবারো পড়া শুরু করতে হবে। এবং পড়ের ৩৩ টা প্রশ্ন পড়ে ফেলতে হবে। এবং আবার আপনাকে পাঁচ মিনিটের জন্য পুরুষ্কার দিতে হবে। আর এভাবেই আপনাকে পুরো interest এর সাথে পড়তে হবে। আর এমনটা করলে দেখবেন কখন যে ৯৯ টা প্রশ্ন পড়া হয়ে গেছে বুঝতেই পারবেন না।

এটা পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার সাথে সাথে অন্য যে কোন কাজেও প্রযোয্য।

৫) Disturbing Element থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।

যখনই আমরা পড়তে বসি তখনই আমাদের কানে ভেসে আসে ফোনে আসা নতুন নোটিফিকেশন। বা অন্য ঘরের টিভির আওয়াজ, বা কোন শব্দ। বর্তমানে আমরা এমন হয়ে গেছি, আমাদের কানে একটি নোটিফিকেশন এর শব্দ পুড়ো পড়ার মুডটা নষ্ট করে দিতে পারে।

তাই পড়ার সময় ফোন, গেজেট বা অন্য কোন কিছু বেশ কিছুটা দূরে সাইলেন্ট মোডে রাখতে হবে। আর টিভির আওয়াজ এলে দরজা বন্ধ করে পড়তে হবে। বা বাড়ির লোকেদের বলতে হবে টিভির ভলিউম কম করতে। এছাড়াও পড়তে বসার সময় জ্বল এবং ছোট খাট টিফিন নিয়ে বসতে হবে।

যাতে পানি খাওয়ার বাহানায় বাইরে গিয়ে দুই ঘন্টা টিভি দেখে পড়ে আফসোস করতে না হয়। কারন আমাদের মন সবসময় চায় রিলেক্স করতে। তাই একবার জ্বল খাওয়ার জন্য বাইরে গেলে পুনরায় মনকে বশ করে পড়া শুরু করা বেশ কঠিন কাজ।

তাহলে আপনি এভাবেই খুব সহজে সম্পূর্ণ মনোযোগ এর সাথে প্রতিদিন পড়তে বসার অভ্যাস টা করতে পারেন। এবং অবশ্যই নিজের জীবনের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবেন। যা কিছু আপনি নিজের জীবনে করতে চান।

তো আপনি নিজের জীবনে কী করতে চান বা কী হতে চান সেটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

 

 

 

Tw3press

My name is Masudur Chowdhury I'm an Management and Engineering Consultant with more than 7 years of experience.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *