সবসময় নিজেকে আনন্দিত ও হাসি খুশি রাখার ৭টি টিপস – ৭টি অভ্যাস যা আপনার জীবন বদলে দেবে।
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল আমাদের হ্যাপিনেস। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে আমরা এই ব্যাপারটি একদমই এড়িয়ে চলি। আর তাছাড়া আমরা নিজেরাই জানি না। নিজেকে কি করে আনন্দে রাখা যায়। নিজেকে আনন্দে রাখা ব্যাপারটা এমনি এমনি হয় না।
এটা আসে আমাদের নিজেদের কর্ম থেকে।নিজেদের অভ্যাস থেকে। আজকে আমি সেরকম সাতটি টিপস শেয়ার করবো। যা তোমার জীবন যাত্রার মান বাড়িয়ে তুলবে। যদি তুমি সত্যিই একটি সুন্দর ও আনন্দে ভরপুর জীবন চাও। তাহলে এই অভ্যাসগুলো নিজেদের মধ্যে গড়ে তোল।
নিজের মনকে যতটা পারো বড় করো। নিজের মানসিকতা কে যতটা পারো উদার করো। ছোট মানসিকতা নিয়ে তুমি কখনোই আনন্দের স্বাদ পাবে না। তোমার প্রতিদিনের জীবনে সেইসব জিনিসগুলি করো। যেগুলোর মাধ্যমে তুমি তোমার উদারতার ছোঁয়া সবাইকে দিতে পারবে। শুধুমাত্র পরিচিতদের সাথেই নয়,
অপরিচিত যেমন
প্রতি এমন কিছু করো যেগুলো তে তাদের সহোযোগিতা হয়। মনে রাখবে এই কাজের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে কোন কিছু আশা করবে না। শুধুমাত্র নিজের আনন্দের জন্য করো। এরকম কোন কিছু যদি তুমি কোনদিনও করে থাকো তাহলে তুমি কমেন্ট করে জানাও।
একবার মৃতপ্রায় ব্যক্তিদের উপর এক গবেষণা চালানো হয়েছিল। যেখানে প্রত্যেক মৃতপ্রায় ব্যক্তিদের তাদের মৃত্যুশয্যায় জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। যে তাদের জীবনের সবচেয়ে অনুশোচনার ঘটনা কোনটি।
অধিকাংশ মানুষের সবচেয়ে বড় দুঃখের কারণ ছিল। যে তারা যাদের ভালবাসে তাদের সাথে যদি একটু বেশি সময় কাটাতে পারতেন। তাহলে বুঝতেই পারছ রিলেশনশিপ আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মৃত্যুশয্যায় কেউ মিথ্যে কথা বলে না। তাই সেই সব মানুষদের সময় দাও। এবং তাদের প্রতি যত্নবান হও। যাদের তুমি সত্যি ভালোবাসো।
তোমার দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাস গড়ে তোল। যাতে আরো বেশি করে তুমি তাদের সাথে থাকতে পারো। যতই কাজ থাকুক না কেন মাকে একবার ফোন করে জিজ্ঞাসা করো। মা দুপুরের খাবারটা খেয়েছে কিনা। বাবার খোঁজ নাও ওষুধ টা ঠিকঠাক নিল কিনা। শত তাড়াহুড়ার মধ্যে নিজের প্রিয়জনকে সময় দাও।
কারণ জীবনের শেষ সময় তোমাকে যেন বলতে না হয়। ইস যদি আগে একটু বেশি সময় দিতাম।
আমাদের জীবনের অন্যতম বড় ভুল হল। আমরা সেগুলোতে বেশি গুরুত্ব দেই যা আমাদের কাছে নেই। আমাদের কাছে যা আছে তার কথা ভুলেই যাই। একজন সুখী মানুষ হবার জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া টা খুব দরকার। তোমার কাছে যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ হও।
কিন্তু তুমি বলবে তোমার কাছে অনেক কিছু নেই। আমি জানি যে তোমার কাছে অনেক কিছুই নেই। কিন্তু এটাও জানি যে তোমার কাছে অনেক কিছু আছে। তুমি এই পোস্টি ইন্টারনেটে পড়তে পারছ, তারমানে তুমি সেই সব মানুষদের থেকে ভাগ্যবান। যারা ইন্টারনেট ইউজ করতে পারছে না। তুমি নিশ্চয়ই এটি স্মার্টফোনে পড়ছ, তারমানে তুমি তাদের থেকে ভাগ্যবান। যারা একটি স্মার্টফোন এমনকি একটি ফোন এফোট করতে পারে না।
তুমি চোখ দিয়ে দেখে পড়ছ। তারমানে তুমি সেই 36 মিলিয়ন অন্ধ মানুষদের থেকে ভাগ্যবান, যারা চোখে দেখতে পান না। তাই তোমার কাছে যা আছে, যতটুকু আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ হও।
একবারে ক্লাসে একজন শিক্ষক তার স্টুডেন্টদের সামনে একটি গ্লাসে অর্ধেক জলভরা রাখলেন। এরপর তিনি স্টুডেন্টদের জিজ্ঞাসা করলেন যে তারা কি দেখতে পাচ্ছে। পজিটিভ মাইন্ডের স্টুডেন্টরা বলল তারা অর্ধেক জল ভর্তি গ্লাস দেখতে পাচ্ছে। নেগেটিভ মাইন্ডের স্টুডেন্টরা বলল তারা অর্ধেক খালি গ্লাস দেখতে পাচ্ছে।
ঠিক এরকমই তুমি কোন ব্যাপার কে কিভাবে দেখছো। পজিটিভলি না নেগেটিভলি তার উপর তোমার ভালো থাকা, খারাপ থাকা নির্ভর করছে।
গ্লাসটিকে অর্ধেক খালি ভেবে তুমি নিজেকে দুঃখী করবে। না অর্ধেক ভর্তি ভেবে খুশি হবে সেটা তোমার উপর নির্ভর করছে। তাই সবকিছু পজেটিভলি দেখার চেষ্টা করো। আশাবাদী হও, প্রতিদিনের জীবনের নেগেটিভ শব্দগুলোকে বর্জন করে তার পরিবর্তে পজিটিভ শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপন করো। দেখবে ভেতর থেকে কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবে। তাই আজ থেকে আশাবাদী হবার চেষ্টা করো।
একজন হ্যাপি মানুষ জানেন কি করে অন্যদের ক্ষমা করতে হয়। এবং কি করে নিজেকে ক্ষমা করতে হয়। নিজের ব্যক্তিত্বকে বড় করে তুলো। অন্যদের ক্ষমা করার অভ্যাস করো। কারণ অন্যদের ক্ষমা করলে তুমি অনেক বেশি স্বস্তি, ও ভালো অনুভব বোধ করবে।
ভাবছো যে তোমার সাথে খারাপ কিছু করেছে তাকে কি করে ক্ষমা করা যায়। তোমাকে তাদের জন্য ক্ষমা করতে হবে না। তোমার নিজের জন্য ক্ষমা করো। তারা ক্ষমার যোগ্য না অযোগ্য সেটা পরের কথা।
কিন্তু তুমি একটি শান্তিপূর্ণ আনন্দিত জীবনের যোগ্য। তাই নিজেকে সেখানে আটকে রেখো না। এগিয়ে চলো, তাই আজ থেকে ক্ষমা করার অভ্যাস গড়ে তোল।
তোমার স্বাস্থ্য তোমার হ্যাপিনেস এর উপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। অসুস্থ শরীর নিয়ে তুমি জীবনকে উপভোগ করতে পারবে না। আর তাছাড়া ও গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, যারা নিয়মিত ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ করে তারা মেন্টালি এবং ফিজিক্যালি ভালো ফিল করে।
এক্সারসাইজ মানেই অনেকে ভাবছো, যে তোমাকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা জিমে গিয়ে হার্ড এক্সারসাইজ করতে হবে। কিন্তু না প্রতিদিন কুড়ি মিনিটের জন্য সামান্য ফ্রি হ্যান্ড ওয়ার্ক আউট তোমার শরীরকে সুস্থ রাখতে যথেষ্ট সাহায্য করে।
প্রতিদিনের খাবারে বেশি করে শাকসবজি খাও এবং পরিমাণ মতো ঘুমাও। তাহলে আজ থেকেই শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়া শুরু করে দাও।
সবার প্রথমে নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা বন্ধ করে দাও। আর একেবারেই বন্ধ করে দাও। অন্যের কি আছে, না আছে। যা তোমার নেই। সেগুলো ভাবা এখন থেকে বাদ দাও।
কারণ এটা তোমাকে জেলাস ফিল করাবে যা তোমার হ্যাপিনেস এর জন্য একদমই কাম্য নয়। যদি কম্পেয়ার করতেই হয় তাহলে নিজের সাথে করো। যে গত একমাসে তুমি কতটা চেঞ্জ হয়েছো।
তুমি তোমার লক্ষ্যের দিকে কতটা এগোতে পেরেছে। যদি না পারো তাহলে তার জন্য কি করতে হবে। সে দিকে নজর দাও।
অন্যের কি আছে না আছে, সেটা ভাবলে তোমার লক্ষ্য পূরণ হবে না। তাই আজ থেকে নিজের সাথে অন্যের তুলনা করার কথা একদমই ভুলে যাও।
বন্ধুরা এই ছিল আজকের টপিক – সবসময় নিজেকে আনন্দে ও হাসি খুশি রাখার ৭টি টিপস – ৭টি অভ্যাস যা আপনার জীবন বদলে দেবে।