ব্যবসা করে সহজে ধনী হওয়ার উপায় ২০২২। Ways to become rich easily by doing business 2022 । How to rich

এই পৃথিবীতে যত ধরনের ধনী ব্যক্তি রয়েছে তার মধ্যে 80% ধনী ব্যক্তিরা ব্যবসা করার মাধ্যমে ধনী হয়েছেন। সেই ব্যবসা ছোট হোক অথবা বড়। কেউ ছোট ব্যবসা করে ধনী হয়েছেন। আবার কেউ বড় ব্যবসা করে ধনী হয়েছেন।

তবে সব ধরনের ধনী ব্যক্তিরাই ছোট ব্যবসা থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে বড় ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছে।

আজ আমরা জানব যে কিভাবে শূন্য থেকে একেবারে শূন্য থেকে ব্যবসা শুরু করে ধনী হতে পারবেন।

তাহলে চলুন শুরু করি একটা ছোট বাস্তব গল্প শুনে নেই। যা আমার নিজের চোখে দেখা। যে কিভাবে বুদ্ধি খাটিয়ে শুন্য থেকে মানে, বাবার কোন কিছু না থাকা সত্ত্বেও ধনী হওয়া যায়।

আমাদের এলাকায় সাজিদ নামে এক বড় ভাই ছিল। তার বাবার কোনো কিছুই ছিল না। সে একেবারেই খুব গরিব ছিল, তার বাবা খেয়া ঘাটের মাঝি ছিলেন। নৌকা দিয়ে মানুষকে নদী পারাপার করত।

সাজিদ ভাই খুবই মেধাবী একজন ছাত্র ছিল।

কিন্তু বাবার টাকা না থাকার কারণে অষ্টম শ্রেণীর বেশি পড়াশোনা করতে পারেন নি। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তার কিছু একটা করার খুব ইচ্ছা ছিল। সাজিদ ভাই সব সময় চাইত যে তাদের ঘরে যে অভাব রয়েছে তা দূর হোক।

তার বাবাও ধীরে ধীরে বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছে আর নৌকা চালাতে পারছে না। তখন বাবার পরিবর্তে সাজিদ ভাই নৌকা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ সংসার চালাতে হবে।

একদিন নৌকা চালাতে চালাতে চিন্তা করে

যে আমি যদি এভাবে নৌকা চালাতে থাকি বাবার মত, তাহলে আমার লাইফটা এখানেই শেষ হয়ে যাবে। আমি আর বড় হতে পারব না। আমি একটা ভাগ্যের বেড়াজালে বন্দি হয়ে যাব। বাবার মতোই সারা জীবন আমাকে নৌকা চালাতে হবে।

কিন্তু সাজিদ ভাই এর কাজ করার মত কিছুই ছিল না।

না ছিল টাকা, ছিল বাবার কোনো সম্পত্তি। শেষ পর্যন্ত সাজিদ ভাই ঠিক করে ঢাকায় আসবে। তারপর সে ঢাকায় এসে একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে 8000 টাকায় চাকরি নেয় আর ওভারটাইম করে 10 থেকে 12 হাজার টাকার স্যালারি আসে।সেখান থেকে চার হাজার টাকা তার খরচ আর 2000 টাকা তার বাবাকে দিয়ে বাকি টাকাটা সে জমিয়ে রাখত। একটা টাকাও খরচ করত না।

তার অতিরিক্ত বন্ধু বান্ধব ছিলনা।

সে বাহিরে কোন প্রকার আড্ডা দিত না। সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিসে যেত। রাতে এসে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তো।

কারন তার সপ্ন এটা ছিল না

যে সে সারা জীবন এই অফিসে চাকরি করবে। তার লক্ষ্য ছিল সে অনেক ধনী হবে। আর সে জানতো যে অষ্টম শ্রেণীর পাশের সার্টিফিকেট দিয়ে এর চেয়ে বড় চাকরি সে কখনোই নিতে পারবে না। সেটা হোক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি অথবা অন্য কোথাও। তারপর সে এভাবেই দুই বছর চাকরি করে প্রতি মাসে 6000 টাকা করে জমিয়ে দুই বছরে এক লাখ 40 হাজার টাকা নিয়ে বাড়িতে যায়।

আর যখন তিনি বাড়িতে চায় তখন ছিল বৈশাখ মাস।

আর এই মাসে সাধারণভাবেই ধান কাটার সময়। তখন নতুন ধান সবাই ঘরে তুলছিলো। আর এই সময়টায় তুলনামূলকভাবে ধানের দাম অনেক কম হয়। আর এই সুযোগটাকে কাজে লাগায়।

তখন তিনি প্রতি মন ধান 500 টাকা করে 1 লাখ 44 হাজার টাকা দিয়ে ধান কিনে নেয়। এখানে বলে রাখি, যে 40 কেজিতে এক মন হয়। আর ধান সব সময় মন হিসেবে বিক্রি হয়। তো সাজিদ ভাই প্রায় 1 লাখ 44 হাজার টাকা দিয়ে 280 মণ ধান কিনে নেয়।

এবং ওই ধান শুকিয়ে কোনরকম ভাবে তার ঘরে রেখে দেয়।

আর অপেক্ষা করতে থাকে কখন ধানের দাম বাড়বে। আর সে ধান গুলো বিক্রি করবে। কারন সে জানতো যে বছরের শেষের দিকে ধানের দাম বেড়ে যায়। ঠিক তেমনি প্রতিবছরের মতো এবছরও একটা সময়ে এসে ধানের দাম বেড়ে যায়। আর তখন সাজিদ ভাই সবগুলো ধান বিক্রি করায় তিনি 250 মন ধান বারোশো টাকা প্রতি মনে বিক্রি করেন।

চিন্তা করুন একবার যে 500 টাকার মনের ধান বারোশো টাকায় বিক্রি করে।

এখানে বলে রাখি তিনি 280 মন কিনেছিলেন কিন্তু সেই ধান শুকিয়ে 250 মন হয়ে যায়। কারণ ধান ভিজা অবস্হায় ওজন একটু বেশি থাকে।

তো সাজিদ ভাই 250 মন ধান বারোশো টাকা করে 3 লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়।

এক বছরে এক লাখ 40 হাজার টাকা ইনভেস্ট করে। সেই এক লাখ 60 হাজার টাকা আয় করে নেয়। আর এভাবেই সাজিদ ভাই পাঁচ বছর চালিয়ে যায়। পাঁচ বছর পর তার কাছে পুজি হিসেবে 48 লাখ টাকা জমা হয়। পাঁচ বছর আগে যে ছেলেটার কাছে ১০ টাকা ছিল না। আজ অদম্য ইচ্ছাশক্তির ফলে 48 লাখ টাকার মালিক হয়।

আর বর্তমানে তার মাছের ফার্ম, সবজি ক্ষেত, ফলের বাগান আরও অনেক জমি রয়েছে।

যেখান থেকে বছরে সে প্রায় এক কোটি টাকা আয় করে। তো বড় হওয়াটা কঠিন কিছুনা। অদম্য ইচ্ছাশক্তি সঠিক চিন্তা পরামর্শ থাকলে বড় হওয়া সম্ভব।

তো এই গল্পটা ছিল আজকের মূল টপিক যে কিভাবে শূন্য থেকে ধনী হতে পারবেন। আমি সরি বিষয়টি ঘুরিয়ে আপনাদের বোঝানোর জন্য। আর আমি ঘুরিয়ে সুন্দরভাবে গল্পের মাধ্যমে না বললে আপনারা বুঝতে পারতেন না। মোটিভেটেড হতেন না, তাই আমাকে ঘুরিয়ে বলতে হল।

গুরুত্বপূর্ণ দুইটা কথা বলি

যে আপনি একটু অতীতে ফিরে দেখুন তো ৫-৭ বছর কিভাবে দেখতে দেখতে কেটে গেছে। তেমনি ভাবে আগামী পাঁচ থেকে সাত বছর দেখতে দেখতে কেটে যাবে। শুধু পরিবর্তন হবেনা আপনার জীবন। আপনি যেমন আছেন তেমনই থেকে যাবেন।

তাই আজ থেকে জীবনের লক্ষ্যে কাজ করা শুরু করে দিন।

একদিন ঠিকই ধনী হতে পারবেন। ধনী হওয়া কঠিন কোন কাজ নয়। পৃথিবীর প্রত্যেক ধনী ব্যক্তি তার সঠিক বুদ্ধি পরামর্শ এবং চিন্তাশক্তি মাধ্যেমে ধনী হতে পেরেছে। পৃথিবীর প্রত্যেকটা ধনী ব্যক্তি যদি তার চিন্তা পরামর্শ এবং বুদ্ধি দিয়ে ধনী হতে পারেন, তাহলে আপনি কেন পারবেন না। আপনার মাঝে তফাতটা কোথায়, কোন তফাৎ নেই।

মানুষের ধনী হবার মূল পার্থক্য হচ্ছে তার চিন্তা।

মানুষ যদি একবার চিন্তা করে ফেলে যে সে ধনী হবে তাহলে নিশ্চয়ই সে ধনী হতে পারে। কারণ এই পৃথিবীতে অসীম সম্পদ রয়েছে। যেগুলো শুধু আপনি আপনার বুদ্ধি খাটিয়ে হাতের মুঠোয় করার অপেক্ষায়।

তবে আপনাকে ধনী হবার জন্য চারটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

  1. অদম্য ইচ্ছাশক্তি
  2. comfort zone থেকে বের হতে হবে।
  3. invest savings money
  4. Invest and again invest.

রুম থেকে বের হয়ে আলাদা কিছু চিন্তা করতে হবে। এবং ইনকামের অর্ধেক টাকা জমিয়ে কোথাও ইনভেস্ট করতে হবে এবং ইনভেস্ট করার টাকাটা বারবার ইনভেস্ট করতে হবে। যেন সেখান থেকে বাড়তি একটা ইনকাম চলে আসে।

Tw3press

My name is Masudur Chowdhury I'm an Management and Engineering Consultant with more than 7 years of experience.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *